ফ্রিল্যান্সিং কি ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে ?

ফ্রিল্যান্সিং কি ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে ? আমাদের জীবন অনলাইনের দিকে আসছে নির্দিষ্ট গতি অনুসারে। আমাদের কেনাকাটা, ব্যবসা, শিক্ষা, অফিস কাজ, পরিবহন, খাবার সহ অনেক কিছু অবশ্যই অনলাইনে সম্পন্ন হচ্ছে। প্রাচীনতম সময়ে, আমরা সরাসরি দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতাম, কিন্তু এখন বেশিরভাগ জিনিসই অনলাইনে ক্রয় করা হচ্ছে। অনলাইনে কেনাকাটা করা সহজ, অসাধারণ, সময়সারম্ভণ এবং অনেক সুবিধা সম্পন্ন। তাই ভবিষ্যতে দোকান বা বাজারে সম্ভাবনাই কমবে, এবং আমাদের সমস্ত কেনাকাটা শুধুমাত্র অনলাইনে ঘটবে।

যেমন আমাদের জীবন অনলাইনে পরিণত হচ্ছে, তেমনি ডিজিটাল মার্কেটিংও গুরুত্ব অর্জন করছে। যখন একটি প্রতিষ্ঠান অনলাইনে যাচ্ছে, তখন অনেকগুলি ডিজিটাল মার্কেটারের প্রয়োজন পড়ে। যেমন, যদি কেমন ফ্যাশন হাউজ নামের একটি দোকান থাকে, যার ৫ জন সরাসরি দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করে, এরপরে যখন সে অনলাইনে বাড়িয়ে নিয়েছে বিক্রি, তখন সরাসরি সেলসম্যানের প্রয়োজন নাই। তাই তারা নিয়োগ ছাড়ে, বরং এখন ১০ জন ডিজিটাল মার্কেটারের দরকার পড়েছে। যেমন: ১ জন ফেসবুক মার্কেটার, ১ জন ইউটিউব মার্কেটার, ১ জন এস.ই.ও এক্সপার্ট, ১ জন ওয়েবসাইট মেনটেনেন্স করে, ১ জন অনলাইনে অর্ডার নেয়ার জন্য, ১ জন কাস্টমারের সাথে চ্যাট করে, আরেকজন প্রোডাক্টের গ্রাফিক্স ও ভিডিও তৈরী করে। এভাবে অনলাইনে কাজ করতে অন্তত ১০ জন লোকের প্রয়োজন হবে, যারা বসে কাজ করবে বা সহজে বললে ডিজিটাল মার্কেটিং করবে।

মালিকের আয় বাড়বে এবং আগের সরাসরি দোকানে যখন এক দিনে সে সেলসে ১ লাখ টাকা করত, তখন এখন অনলাইনে সে সেলসে ১০ লাখ টাকা পাওয়া যাবে। একইভাবে যখন প্রতিষ্ঠান অনলাইনে চলে, বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে আরো অনেক বেশি অনলাইনে কাজ করার লোকের প্রয়োজন হবে।

যতটুকু সময় পরেছে ততটুকু মানুষের অনলাইন নির্ভরতা বাড়ছে। অনলাইনে কাজ করার এটি একটি অগ্রগতির চিহ্নিত উপায় হিসেবে হতে যাচ্ছে – “ফ্রিল্যান্সিং”।

এখন আপনার হাতে আপনার ভবিষ্যতে ফ্রিল্যান্সিং কি বাড়বে নাকি কমবে তা সিদ্ধান্ত নিতে বলা সহজ নয়।

বাংলাদেশে চাকরি কম, বেকারি বেশি। তবে, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতে সেই চাকরিতে আবেদনকারী অনেক বেশি, যারা প্রার্থী নাই। অনলাইন বা ফ্রিল্যান্সিং এটির একটি সমাধান। অনলাইনে কোন জাতীয় সীমা নেই, কোন ভিসা বা পাসপোর্ট প্রয়োজন নেই। আপনি খুব সহজেই দেশে থাকার সময় বিদেশী কোম্পানিতে অনলাইনে আবেদন করতে পারেন, অনলাইনে ইন্টারভিউ দিতে পারেন, অনলাইনে কাজ করতে পারেন এবং সরাসরি আপনার ব্যাংক একাউন্টে বেতন প্রাপ্তি করতে পারেন।

উন্নত বিশ্বের সকল চাকরি এখন অনলাইনে হচ্ছে, যা একটি বেকারি পূর্ণ দেশের জন্য একটি উদ্বেগকর সমাধান। ভবিষ্যতে চাকরি বলতে অনলাইন জব বোঝানো যাবে।

একটি মজার বিষয় হল অনলাইন জবে সেলারী দেয়া হয় ডলারে। যে চাকরীর জন্য বাংলাদেশে আপনি ২০ হাজার টাকা বেতন পাবেন, তাই চাকরি অনলাইনে করলে আপনি ২ হাজার ডলার পাবেন। এই দুটি হাজার ডলার তাদের জন্য খুব কম, কিন্তু আমাদের জন্য অনেক বেশি। বাংলা টাকায় কনভার্ট করলে যে মূল্য পাওয়া যায় তা প্রায় ২ লাখ টাকা। এটা মানে যে, আপনি যখন দেশে কাজ করেন এবং ইনকাম করেন, তখন তা যদি বিদেশী কোন কোম্পানির জন্য করেন, তার দশগুণ টাকা ইনকাম করা যাবে

(ফ্রিল্যান্সিং কি ভবিষ্যতে বন্ধ হয়ে যাবে ?)

অনলাইন চাকরি নিশ্চিতভাবে সিকিউর এবং সহজসাধ্য হতে পারে। একটি চাকরি পাওয়ার পরে আপনি অনেক আরও চাকরি সংক্রান্ত সুযোগ পেতে পারেন, কারণ অনলাইনে অনেক বিভিন্ন ধরনের চাকরি উপলব্ধ থাকতে পারে। আপনি সারা পৃথিবীর জব মার্কেটে অংশগ্রহণ করতে পারেন।

তবে, চাকরী থাকা অন্তত আনন্দের জন্য প্রধান কারণ নয়। এই চাকরিগুলি পেতে হলে আপনাকে কাজগুলি ভালভাবে শিখতে এবং স্কিল বাড়াতে হবে, যাতে আপনি নিরাপদে এবং কার্যকর ভাবে সম্পাদন করতে পারেন। এতে নিশ্চিত হতে হবে যেন আপনি চাকরিতে উন্নতি করতে পারেন।

পৃথিবী এবং চাকরির প্রকৃতি পরিবর্তন হচ্ছে। যারা এই পরিবর্তন সঙ্গে তাল মিলাতে পারবে, তারা সম্ভাবনামূলক ভাবে অবস্থান করতে পারে। যারা নতুন প্রযুক্তি অনুসরণ করতে পারবে না, তারা পিছিয়ে যাবে।

Leave A Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *